Saturday 5 March 2016

ম্যাজিক পট



            আপিশ থেকে আসতেই তিতির হাঁউমাউ করে ছুটে এল। “মা, মা, সব্বোনাশ হয়েচে!”

    একটু আগেই নিচে দেখে এসেছি তার বল পেটানোর সঙ্গীরা জটলা করছে, কার নাকি দৌড়তে গিয়ে পড়ে গিয়ে হাঁটু ছড়ে গেছে তাই নিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লুম, মেয়ের কি সব্বোনাশ হল তা ভেবে।

    “কি হয়েছে রে?”

    “আজ তো বেশ্‌পতিবার? কিন্তু আজ আমার ম্যাজিক পট আসেনি! কি সব্বোনাশ বল তো?”

    এ হে হে! তাই তো! প্রতি বুধবার সন্ধেবেলা ম্যাজিক পট নিয়ে ফিরি। দাদু লুকিয়ে রাখে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাত খাবার সময় ওটি পায়। কাল তালেগোলে ভুলে গেছি। এমনকি আজও ভুলে গেছি।

    “তাই তো? ভারি অন্যায়! চ গিয়ে নিয়ে আসি।”

    মা যে এটাও পারে, সেটা জেনে স্বর্গীয় হাসিতে পুঁচকে মুখটা ভরে উঠল। যাচিয়ে নিল, “আমিও যাব তো তোমার সঙ্গে?”

    “হ্যাঁ রে! দাঁড়া জিনিসপত্রগুলো রেখে আসি।”

    ------

    মার হাত ধরে ঝুলতে ঝুলতে দোকানপাড়ায় আসা হয়েছে। মার কফি, বিস্কুট কেনা হয়েছে, মেয়ের গাছের চারদিকে বোঁ বোঁ করে পাক খাওয়া, হবি সেন্টারে মাছেদের খবরদারি করা, হয়েছে। এবার তার লাড্ডু খাবার শখ হয়েছে, কেনা হয়েছে, রকে বসে পা দুলিয়ে দুলিয়ে ভোজন চলছে। তার বকর বকরে তাল দিতে দিতেই চুপিসারে ‘ম্যাজিক পট’টা আনিয়ে নিই চেনা দোকানদারকে দিয়ে।

    লাড্ডু শেষ করে, কাগজটা ডাস্টবিনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতেই তিতিরকে বলি, “দ্যাখ তো হাতে কি আমার?”

    চোখ কৌতূহলে চকচক, তারপরই পরম উল্লাসের হাসি। খালি আমায় জড়িয়ে ধরছে আর বলছে “নত্তুন ম্যাজিক পট! ম্যাজিক করে এসে গেছে!”

    ওখানে বেলুনওলাও ছিল। রাশি রাশি খেলনার দোকানও। তিতিরকে দেখিয়েওছিলুম সেসব। বিনা বাক্যব্যয়ে ঘাড় নেড়ে বইটা বুকে সাপটে ধরে অটোর লাইনের দিকে চলল মেয়ে, বাড়ি ফিরেই দাদুর কাছে ‘পড়তে’ বসতে হবে!



(২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬)

 

2 comments:

  1. Titir ebong tar maa er blog er kolyan e amar GK barlo.... magic pot ki jinish jana holo!!!! :)

    ReplyDelete