Saturday, 8 September 2018

আঁক


তিতিরের কিচ্ছু ভাল্লাগছে না। কিসব মুণ্ডু মাথা বন্ধ্ হল, আর ইক্কুল ছুটি দিয়ে দিল। আজ বলে ওদের হিন্দি এক্সাম ছিল কত্ত ভাল করে তৈরি করেছিল দিম্মার কাছে! হ্যাঁ বাপু, হিন্দিটা দিম্মাই ভালো পড়াতে পারেন, মা তো কোনদিন হিন্দি পড়েনি ইক্কুলে আর দাদুমণির হিন্দি...ওরে বাবা!  দাদুমণি হিন্দি প্র‍্যাকটিশ করার জন্য মাঝে মাঝে আন্টিকে হিন্দিতে ইন্সট্রাকশন দেয়, আন্টি ঘরমোছা ফেলে মুখে চাপা দিয়ে হাসতে হাসতে পালায়!


তো যাক। এদিকে পড়া তৈরী, সকালে দুধ খাওয়া হয়ে গেছে ব্রেকফাশ্ খেতে দেরি আছে এই সময়ে তিতির করে কী? ওদিকে আজব বন্ধ্, তিতিরের ইক্কুল ছুটি কিন্তু মায়ের ছুটি নেই। যদিও অন্যদিনের মত সাতসকালে বেরোচ্ছে না তবু এই কিসব কাজ সারল, চান করতে যাবে এবার। কাজেই মায়ের পেটে চড়ে বসে জলদস্যুগিরিও করা যাচ্ছে না।


কাজেই তিতির 'বোর' হয়ে যাচ্ছে!


কিন্তু মা থাকতে কি আর বোর হওয়া "অ্যালাউড"? কক্ষণো না।


অতএব, ল্যাপটপ বন্ধ করে পড়ার টেবিল গোছাতে গোছাতে মা গল্প বলার সুরে শুরু করে,

"কাল জানিস জানলা দিয়ে দেখি কি, তিতির,  বিশুমামা আর সামুমামা সামনের পুকুরপাড়ে বসে গপ্পো করছে। তারপর না, সন্ধে হতে মশার ঝাঁক বেরোল। বিশুমামা এগারোটা, সামুমামা পাঁচটা আর তিতির তিনটে মশা মারল। বল তো মোট কটা মশা মারা হল?"


তিতির খুব উৎসাহ নিয়ে উঠে বসেছিল, কিন্তু ডিস্ট্রিবিউশনটা তার মোটেই পছন্দ হল না।


"ধ্যাৎ! সামুমামা অত পারবে না। সামুমামা তিনটে মেরেছে আর তিতির পাঁচটা।"


"পারবে না কি রে! অত বড় একজন লোক, পারবে না!"


"না, না। সামুমামা খুব ভালো, কাউকে মারতে টারতে পারবে না।"


অফিসের ব্যাগে ওষুধ ফোনের চার্জার টাকাপয়সা এসব গুছোতে গুছোতে মা এরকম বাজে যুক্তি শুনে প্রতিবাদ না করে পারল না।

"কাউকে মারে না তো তিনটে মারবে কেমন করে?"


"আহহ, ওগুলো আমি চুপিচুপি মেরে ওর হাতে দিয়ে দিয়েছি, নইলে কাঁদবে তো!"


যত ইয়ে!
"বেশ করেছিস। এবার বল কটা মশা?"


তা হিসেব ঠিকই বলে মেয়ে। মা ততক্ষণে আলমারি থেকে জামা কাপড় বার করতে লেগে গেছে। 


"মা আরেট্টা অঙ্ক দাও এমন? মশা মারার?"


খুব মজা পেয়েছে দেখি! অবশ্য তিতিরের মা-ও পেত, দাদুমণি যখন "ক্যাবলাকান্ত প্রবল ঠাণ্ডা লাগিয়ে প্রতি মিনিটে ৩ বার হাঁচিলে এক ঘন্টায় কতবার হাঁচিবে" গোছের অঙ্ক দিত পড়াতে বসে।


কিন্তু একটু বড় অঙ্ক না দিয়ে গেলে সমূহ বিপদ। চান শেষ হবার আগেই মেয়ে দরজা ঠ্যাঙাতে লেগে যাবে উত্তর নিয়ে। অগত্যা,


"সেদিন তিতিরের বাড়িতে গুবলিমাসি আর ভুতুমাসি এসেছে। তিতিরের মাম্মা তাদের ৭টা রসোগোল্লা, ৫টা লাড্ডু আর ৩টে পাশবালিশ-মিষ্টি খেতে দিয়েছে। লেখ নাম্বারগুলো, ভুলে যাবি।"


তিতির টক করে মায়ের খাতা পেন টেনে নিয়ে লিখে ফেলে।


"এইবার ভুতু তো মোটে খেতে পারে না, তাই ভুতু একটা করে সব মিষ্টি খেল। লিখলি তো?

তারপর না, তিতিরেরও খুব ইচ্ছে হচ্ছিল তাই তিতির দুটো লাড্ডু আর একটা পাশবালিশ-মিষ্টি খেয়ে নিল। তাই দেখে তিতিরের মাম্মাও আর লোভ সামলাতে না পেরে দুটো রসগোল্লা খেয়ে নিল। বাকি যা রইল, তা গুবলিমাসি খেল।

তাহলে, গুবলিমাসি কটা কোন মিষ্টি খেল?"


বলেই মা পাঁই করে পালায় চান করতে, তিতির মন দিয়ে পেনটা বাগিয়ে ধরে হিসেব কষে। মা চান সেরে এসে দেখে ঠিক ঠিক আঁক করেছে পুঁচকিপানাটা। তখন মেয়ের হাতের বাঁধনে আটকা পড়া মা আর মায়ের কোলে ঝুলতে ঝুলতে মেয়ে, দুজনে মিলে ব্রেকফাশ্ করতে যায়।


রে!!! আরো বসে আছেন কেন? আঁকগুলোর উত্তর আমি মোটেও বলে দেব না, যান নিজে হিসেব কষে বার করুন!

2 comments:

  1. আহা!বড্ড মধুর!

    ReplyDelete
  2. Casinos Near Me - JTG Hub
    If there's no doubt that 제주도 출장샵 the casinos at Mohegan Sun are, 과천 출장안마 it's 서귀포 출장샵 easy to find them. In 동두천 출장샵 fact, in general, the best casinos in Connecticut 대전광역 출장안마

    ReplyDelete