আজ বাড়িতে একটা ইয়াব্বড় মৌমাছি ঢুকে পড়েছে।
না। সত্যি মৌমাছি নয়। তিতির সকাল থেকে মৌমাছি
সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটা লাল রঙের বালি আঁচড়ানোর খন্তা কোমরে গুঁজেছে – সেটা নাকি মৌমাছির হুল।
“মৌমাছিটা না, খুব রাগী। কেউ দুত্তুমি করলেই হুল ফুটিয়ে দেয়।”
ডেমো দিয়ে গেল আমাদের সবাইকে একবার করে হুল ফুটিয়ে। মৌমাছির আবার
রাগ হয় হুলের খোঁচা খেয়ে আর্তনাদ না করলে!
বেশ খানিকক্ষণ চুপচাপ। খেলার ঘরে প্রচুর কার্যকলাপ চলছে টের পাচ্ছি,
কিন্তু শনিবারের সকাল, গুচ্ছ গুচ্ছ সাংসারিক কাজ, তাছাড়া আপনমনে খেললে আমরা পারতপক্ষে
‘ডিট্টাব্’ করি না।
হঠাৎ রান্নাঘরে এসে হুলুস্থুলু আবদার, “আমি হানি খাবো! ফুল থেকে
হানি খাবো – আমায় একটা বিরাট বড় ফুল এনে দাও!”
“ও বাবা, তুই হানি খাবি তেমন ফুল কোথায় পাব রে! তুই কৌটো থেকে হানি
খা না, চামচ করে? পু বিয়ার এর মত?”
“নাহ্! মৌমাছি কখনো পু বিয়ার হয়? মৌমাছি কখনো কৌটো থেকে হানি খায়?
কিচ্ছুই জানো না!”
বিপদে পড়লুম। কথা ঘুরিয়ে, অন্য গপ্পো টপ্পো বলে, মাথা থেকে হানি
উড়িয়ে দেওয়া গেল অবশ্য। ইন ফ্যাক্ট, তিতিরের মাথা থেকে মৌমাছিই উড়িয়ে দেওয়া গেল।
কিন্তু, তার বদলে এবার বাড়িতে একটা বাজপাখি ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেটা আবার ‘ভাল
বাজপাখি। তোমাদের কিচ্ছুই করতে হবে না।”
এরকম ঢালাও প্রশংসা শুনে একটু সন্দেহ হয়েছিল, জিগ্যেস
করেছিলাম, “বাজপাখিটা কি খায় রে?”
চট্ করে ভেবে নিয়ে, কাঁধ ঝাঁকিয়ে
মেয়ের জবাব,
“পোকা টোকা খায়। নিজেই ধরে নেয় ওসব। তোমার কোন চিন্তা নেই।”
সেই থেকে আমাকেও শ্যেনচক্ষু হয়ে পাহারা দিতে হচ্ছে, কি
জানি যদি ঘরে কোনো ‘পোকা
টোকা’ বাজপাখির সামনে এসে পড়ে!