Tuesday, 24 July 2018

গপ্পোগাছা




ইনি হচ্ছেন আমার কন্যা, দাদুমণি-দিম্মার নান্নি। তাঁদের দুজনের ছোটবেলা আমি উঁকি মেরে দেখতে যাইনি বটে, তবে এটুকু মনে আছে আমি জ্ঞান হবার আগে থেকে তাঁদের মুখে গল্প শুনছি, আর নিজে প্রথম গল্প বানিয়েছিলুম বছর তিনেক বয়েসে। চিত্রসহযোগে।
“কোথাও কেউ নেই, চারিদিকে জঙ্গল, তার মধ্যে একটা মাছ।“
আর প্রথম গল্প ‘লিখেছিলুম’ এই তিতিরের এখনকার চেয়েও ছোট বয়েসে। ক্লাস ওয়ানে সম্ভবত। সেটা বলব নাকি? বলব?
“এক রাজা ছিল, তার নাম চম্পা। আর তার মন্ত্রী ছিল, তার নাম ছিল রামমোহন দাস। একদিন রাজা আর মন্ত্রী সভায় বসে পরামর্শ করছে, এমন সময়ে দাসী এসে বলল, রানীমা বলেছেন লাল শাড়ি নেব, নীল শাড়ি নেব, হলুদ শাড়ি নেব, গোলাপী শাড়ি নেব, বেগুনী শাড়ি নেব না।
তাই শুনে রাজা বললেন, রানীরা অমন বলেই থাকে!”
এতটা ভয়ানক ভবিষ্যদর্শী নাহোক, তিতিরও মুড হলেই গল্প বানায়। তবে নীচেরটা, তার মুখে শুনলেও, তার গল্প নয়। তিনি নাকি “হুবহু” এটা স্বপ্ন দেখেছেন।
---
আমি সাইকেল চালাতে চালাতে একটা বিল্ডিং দেখলুম। আমি যেমন বিল্ডিং ব্লক্স দিয়ে বানাই।
সেটাতে দাদুর হাত ধরে ঢুকে দেখি মুরগীর ঘর। মুরগীরা লাইন দিয়ে রাশি রাশি ডিম পেড়ে রেখেছে।
এরপর উঠতে উঠতে দেখলুম একটা স্পাইডার। ইয়াব্বড় নেট বানিয়েছে। আমি না, লাফিয়ে সেটা পেরিয়ে গেলুম। কিন্তু দাদু লাফাতে পারছিল না তাই আবার ফিরে এলুম।
এরপরের তলায় উঠে দেখি একটাও জানলা নেই। দম কোথা থেকে নেবে! দাদু বলল পাখা আছে তা বলে।
এরপর আরো উপরে, শূন্য,ছাত নেই। বাড়ি শেষ হয়নি।
তারপর না, পা ফস্কে গ্রাউন্ডে পড়ে গেলুম। অ্যালিসের মত। কিন্তু সেখানে এত এত পিল্লো রাখা ছিল, তাই আমার একটুও লাগল না।
এরপর ‘হঁঃ’ করে উঠে বসে দেখলুম নিজের বিছানায়ই আছি। তখন বুঝলুম স্বপ্ন দেখছিলুম।

----


পুনশ্চ – এইটে লেখার সময় একজন আমার টেবিলে এসে বসলেন, দুধের গ্লাস নিয়ে, উচ্চকিত গলায় গান গাইতে গাইতে।
ভাষাটা বুঝলাম না। জিগালুম। বললেন, “আমি ‘মারাঠী’ গান গাইছি।”
মারাঠী ভাষাটা যে একেবারে জানি না তা না। কিছুই বুঝতে পারছি না দেখে চিন্তিত হয়ে পড়লুম। বহুকাল অনভ্যাসে ভুলে যাচ্ছি মনে হয়। থাক, এ যখন পড়বে তখন আমিও ঝালিয়ে নেব আবার নাহয়।
বুঝতে পারছি না বুঝে, তিনি আমায় বেশ কিছু শব্দের মানেও বলে দিলেন। একটাও আগে শুনিনি। কথ্য শব্দ হয়তো।
“কে শিখিয়েছে রে তোকে? শচীন? না সরিতা?”
তিনি ততক্ষণে দুধ শেষ করে ফেলেছেন। উঠে, গ্লাসটা বেসিনে রাখতে যাবার আগে বলে গেলেন,
“না, ওদের তো আমিই শেখাই।”
ধাঁধা লেগে বসে আছি, দরজার কাছে থেকে তাঁর আরো ব্যাখ্যা,
“মাম্মা, ওদেরকেও না, মানে বলে বলে দিতে হয়। গানগুলো আমি নিজে নিজে বানাই কিনা...”